100 $USD💰💶💵 für das Spielen eines 2-minütigen Spiels. Click & Try👇👇😲
love story in bangla , love story bangla , happy life story
হৃদয়ে তোমায় এঁকে যাই
পর্ব ৩
আমি সেখানে দাঁড়াতেই দেখলাম উনি গাছ থেকে ঘুড়িটা ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
ঘুড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে নিচে রেখে দিলেন। তারপর গাছের পাতায় হাত বুলিয়ে কি যেন দেখলেন। আমি খুবই হতাশ হলাম৷ ইশ একটু যদি পরে দেখতো, মনে হয় একটু হাসতো। রুমে চলে যাবো আর ঠিক তখনই নিচে থেকে ঘুড়ি টা উঠালেন৷ লেখাটা পড়েছে বুঝতে পারলাম কিন্তু আমি তার হাসিটা দেখতে পারিনি উনি তো অন্যদিকে ঘুরে ছিলেন৷
যাই হোক পড়েছেন তো না এটাই যথেষ্ট এখন থেকে এটা পড়ানোর অভ্যাস করে তুললেই উনার ভালোলাগা শুরু হয়ে যাবে হয়তো।
এভাবে প্রায় প্রতিদিন আমি একটা করে ঘুরি রেখে আসতাম। জানি না সে ঘুরি গুলো আর পেতো কি না। আমি প্রতিদিন দেখতে যাইনি। ধরা পরে গেলে আমাকে আস্ত রাখবে না কেউ। দেখতে দেখতে পনেরো টা দিন পার হয়ে গেলো, সাথে পনেরো টা ঘুড়িও শেষ। এরই মাঝে সেই বড় ভাইয়ার সাহায্যে আমার ছোট্ট একটা চাকরি হয়, রড সিমেন্টের দোকানে।
love story in bangla
ওখানে হিসাব-নিকাশ সহ যাবতীয় দেখাশোনার দায়িত্ব পরে আমার উপর। অনেকটা ম্যানেজারের কাজ ও বলা যায়। তবে পারিশ্রমিক খুবই অল্প। যাই হোকনা কেনো কিছু তো একটা হলো। এরই মাঝে চাকরির জন্য আলাদা করে পড়া শুরু করে দিয়েছি। দোকানের মালিক বেশ ভালো সন্ধ্যার একটু আগেই আমাকে ছেড়ে দেন, রাতে এসে রান্না করে খাওয়ার পর ও বেশ সময় পাই।
একদিন দোকান থেকে বাসায় ফিরছিলাম, গেটে প্রবেশ করতে যাবো এমন সময় দেখি বাড়িওয়ালা আংকেল অসুস্থ হয়ে গেছেন। পুষ্প আপু তার সাথে বাসার দারোয়ান ধরাধরি করে বাইরে নিয়ে আসছে।
আমি এগিয়ে গিয়ে আংকেল কে ধরলাম৷
-কি হয়েছে?
-প্রেশার বেড়েছে হসপিটালে নিতে হবে (পুষ্প)
love story in bangla
দারোয়ান একটা সি এন জি ডেকে নিয়ে আসলো। আমি আংকেল কে নিয়ে সি এন জি তে বসলাম। পাশে বসলো পুষ্প। আর দারোয়ান গেটে থেকে গেলো। কাছেই একটা হসপিটালে নিয়ে আই.সি.ইউ তে রাখা হলো। আংকেল এর অবস্থা বেশি ভালো না। আই.সি.ইউ এর রুম থেকে একটু দূরে আমি আর পুষ্প আপু দাঁড়িয়ে আছি। আমি উনাকে কিছু বলছি না, উনিও আমাকে একটা কথাও বলেনি। রাত তখন ৯ টা আমি বললাম....
-আপনি বাসায় যান
-কেনো? (পুষ্প)
-এখানে থাকতে পারবেন না, আর আপনি খেয়ে আসেননি৷ এখন বাসায় যান, সকালে আসার সময় আমার জন্য ভাত রান্না করে নিয়ে আসবেন৷
-আপনার সমস্যা হলে আপনি বাসায় যান
আমি কিছু সময়ের জন্য বাইরে চলে আসলাম। আমার খুব খুদা পেয়েছে।
কিছু খাবার খেয়ে উনার জন্য কিছু কিনে তারপর ভেতরে গেলাম। হসপিটালের ভেতর মানুষের চাপ কমেছে। পুষ্প আপুকে দেখলাম একটা বেঞ্চে বসে আছে। আমি গিয়ে তার পাশে খাবার আর পানির বতল রেখে বললাম। আমি খেয়ে আসলাম, আপনি খেয়ে নিন।
love story in bangla
উনি কোনো কথা না বলে খেতে শুরু করলেন৷ এটা দেখে ভালোই লাগলে।
রাত তখন এগারোটা আমি ঠিক একই অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছি।
নিজেকে এখন জড় বস্তুর মতো লাগছে। মাথায় নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে৷
আংকেলের যদি কিছু একটা হয়ে যায় তাহলে এই মেয়েটার অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।
এখন একটাই দোয়া আংকেল যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেন।
আমি এসব কথা যখন ভাবছি তখন পুষ্প আপু বলল ।
love story bangla
আমি আব্বুকে একটু দেখে আসি(পুষ্প)
এখন না সকালে দেখেতে যাবেন
না আমি এখন দেখবো
এখন ভেতরে যেতে দিবে না, আংকেল মনে হয় ঘুমাচ্ছে, আর ডক্টর তো বলেছে উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন
-হুমমম
-আমি বললাম আপনি বাসায় যান, এভাবে জেগে থেকে অসুস্থ হয়ে লাভ আছে? আংকেল যখন বাসায় যাবে তখন তাকে সেবা করতে আপনার সুস্থ থাকা লাগবে। এখন যদি নিজেই অসুস্থ হয়ে যান তাহলে...
-আমার সমস্যা হচ্ছে না, আর আপনি বাসায় চলে যান। আমি এদিকে সব ম্যানেজ করতে পারবো
-না আমার থাকতে হবে
-কেনো?
-বাবা-মেয়ে দুজনই অসুস্থ
-কে বলেছে আমি অসুস্থ?
-আমিই বলছি
-আপনার সকালে কাজ নেই?
-আছে
-আপনার যাওয়া দরকার
-জ্বি না, যতই মুখে বলেন একা মানুষ কিছু করতে পারবেন না৷ কথা বইলেন না তো আমি আছি থাকবো
পুরো রাত দুজনেই জেগে কাটালাম। সকাল বেলা ডাক্তার এর কাছে থেকে জানতে পারলাম আংকেল এর অবস্থা আরও খারাপ এর দিকে, আমি ভেতরে গিয়ে একবার দেখেও আসলাম। পুষ্প আপুকে আমি ভেতরে যেতে দেই নি। উনাকে বললাম আংকেল আগে থেকে একটু ভালো আছেন। সকাল বেলা সে নিজে থেকে বাসায় গেলো। ঘন্টা দুয়েক পর ফিরে বলল
love story bangla
-আমি রান্না করে আসলাম আর খেয়ে আসলাম। এই নেন চাবি। আমার রুমে টেবিলের উপর খাবার রেখে আসছি। আপনি খেয়ে রেস্ট নেন
আমি চাবিটা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। উনাদের রুম থেকে খাবার নিজের রুমে নিয়ে এসে খেলাম। তারপর ফোন করলাম দোকানের মালিক কে। উনি আমার কথা শুনে ছুটিও দিলেন। আমি একটা ঘুম দিলাম। একদম সন্ধ্যায় জেগে উঠে হসপিটালে গেলাম। এবার সত্যি সত্যি আংকেল একটু ভালো হয়েছেন। সেদিন রাতে কেউই হসপিটালে থাকিনি। পরদিন ভোরে পুষ্প আপু হসপিটালে যায় আর আমি দোকানে। দুদিন পর আংকেল কে বাসায় আনা হলো। উনি তখন মুটামুটি সুস্থ।
সেদিন সন্ধ্যায় আমি গেলাম তার সাথে দেখা করতে। কলিং বেল বাজাতে আপু দরজা খুলল...
-আংকেল কি করছে?? (আমি)
-ঘুমাচ্ছে (পুষ্প)
-ওহহ তাহলে থাক
-কিছু বলবেন?
-আংকেলের সাথে দেখা করতে আসছিলাম
-ওহহহ
-আচ্ছা ঠিক আছে পরে আসবো
আমি রুমে এসে খেয়ে একটু বই নিয়ে বসেছি তখন পুষ্প আপু রুমে আসলো।
-বাবা আপনাকে ডাকছেন (পুষ্প)
-আচ্ছা আপনি যান, আমি আসছি
হুট করে উনি রুমে আসায় বুকের মধ্যে কেমন যেন করে উঠলো। হঠাৎ করে দেখেই ভয় পেয়েছি। দরজা টাও লাগিয়ে দেই নি। যাই হোক বই রেখে দিয়ে গেলাম আংকেল এর কাছে উনি আমার খোঁজ খবর নিলেন। সেদিন বিপদে হেল্প করায় একটু প্রশংসা করলেন৷ তারপর বললেন...
-আমি আমাকে নিয়ে অতটা টেনশন করি না, আমি মারা গেলে আমার মেয়ের কি হবে সেটা নিয়েই বেশি টেনশন করি। ওর আমি বিয়ে দিতে পারছি না৷ ও তো রাজি না তারউপর ওর পেছোনোর কথাগুলো যে পরিবার জানবে সে পরিবারে ও যেতে পারবে না। আমার মেয়েটার কি যে হবে..
-আংকেল এগুলো নিয়ে চিন্তা কইরেন না তো, আল্লাহ একটা ব্যবস্থা করবেন
-যখন সন্তান এর বাবা হবা তখন বুঝতে পারবা
-জানি, কিন্তু এসব টেনশন কইরেন না শরীর টা এমনিতেই খারাপ আপনার..
আরও কিছুসময় গল্প করে রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে আমার কেনা
ঘুড়ি গুলোর কথা মনে হলো। ঘুড়ি গুলোতে কিছু লিখে আর রেখে আসা হয় না অনেকদিন হলো। "রঙিন ঘুড়ি" এখন টেনশন মুক্ত এখন একটা ঘুড়ি রেখেই আসা যায়। রাতেই একটা ঘুড়ি রেখে আসলাম৷ সকালে উঠে দেখি ঘুড়িটা অমনই আছে। সন্ধ্যায় এসে দেখি ঠিক তেমনই আছে৷ তারমানে কি উনি আর ছাদে যান না? নাকি উনি বুঝে গিয়েছেন ইচ্ছে করে কেউ হয়তো রেখে যাচ্ছে তার জন্য।
পরদিন সকালে গিয়ে আর ঘুড়িটা পেলাম না, হয়তো বাসার কোনো মহিলা নিয়েছে না হয়তো উনিই নিয়েছেন৷
আমি আমার মতো প্রতিদিন ঘুড়ি রাখা শুরু করলাম। সবগুলো যখন ফুরিয়ে গেলো তখন আর রাখলাম না। ভাবলাম কার না কার হাতে পরে কে জানে।
happy life story
ঠিক একমাস পর আমি একটা দাওয়াত নিয়ে আংকেল এর কাছে গেলাম।
-হ্যাঁ তুমি যেন কি বলছিলে??(আংকেল ফোনে কথা বলছিলো ফোনটা রেখে বলল)
-আংকেল আমার আম্মা আপনাকে আর আপুকে দাওয়াত করেছেন (আমি)
-কি বলো এগুলা! উনি আমাদের দাওয়াত করেছেন?
-জ্বি আংকেল
-কি জন্য??
-পিঠার দাওয়াত
-আচ্ছা এখন না এর পরের বার যাবো
-আংকেল আমি এখানে নাও থাকতে পারি। আপনাকে এবারই যেতে হবে।
-আমি তো এখন ব্যস্ত
ঠিক ঐ সময় পুষ্প আপুও এসে দাঁড়ালো।
-দেখেন আংকেল আপনার আর আপুর মন একদম পাথর হয়ে গেছে। কোথাও ঘুরতে যান না, আপনারা দুজন হাসেন ও না৷ আপনি থাকেন কাজে ব্যস্ত আর আপু তে সারাদিন চুপচাপ থাকে। আম্মার দাওয়াত গ্রহণ করে আমার সাথে চলেন
-পুষ্প তুই কি বলিস?
-বাবা তুমি গিয়ে ঘুরে আসো
-আপনি না গেলে তো আংকেল যাবে না
-বাবা তুমি গেলে যাও না গেলে না যাও আমাকে এসবে টেনো না
-আপু আপনি গেলে আপনার কিন্তু ভালো লাগবে
-আমি এমনিতেই ভালো আছি (কথাটা বলে চলে গেলেন উনি)
happy life story
আংকেল আমার দিকে তাকিয়ে বললেন...
-শুধু তুমিই গিয়ে ঘুরে আসো আমরা একদিন সময় করে যাবো
-কিয়ামতের আগের দিন যায়েন (বিড়বিড় করে বললাম)
-কিছু বললে?
-না আংকেল বললাম যে তাহলে আমারই যেতে হবে
আংকেল এর রুম থেকে বের হলাম, এখন চলে যাবো ঠিক তখনই পুষ্প আমাকে ডাকলেন...
-এই এদিকে আসেন (পুষ্প)
আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম..
-জ্বি বলেন..(আমি)
-আপনার গ্রাম কতদূরে?
-অনেক দূরে
-কিভাবে যেতে হয়?
-ট্রেন বাস দুটোতেই
-ট্রেনে যাওয়া গেলে যাবো
-মনে করেন টিকিট রেডি
-হুমমম
-কিন্তু আপনার বাবা তো মানা করে দিলেন
-আমি রাজি হলে উনি রাজি হবেন
-ওহহহ
-তাহলে আমরা যাচ্ছি কবে?
-দুদিন পর, আর শোনেন শহরে তো শীত নেই, গ্রামে অনেক শীত, শীতের কাপড় নিয়েন
-ঠিক আছে, আর কিছু?
-না আর কিছু না
দুদিন পর.
আজ সকালে রওনা হবো। আমি আমার সবকিছু গুছিয়ে রেডি হয়েছি। বাড়িতে যাওয়ার আনন্দ টাই অন্য রকম। তবে এবার আমার মধ্যে টেনশন কাজ করছে। মেহমান সাথে নিয়ে যাচ্ছি আলাদা একটা ভয় কাজ করছে। তারউপর "রঙিন ঘুড়ি" আলাদা একটা টেনশন। উনার সামনে দাঁড়াতেই আমি আমার স্বাভাবিক আচরণ করতে পারি না। ভেতরে প্রচুর ভয় কাজ করে।
happy life story
আমি রেডি হয়ে উনাদের রুমে গেলাম। গিয়ে দেখি আংকেল ও রেডি হয়েছেন। আর আপু বের হলেন বোরখা পরে। শুধু উনার চোখটাই দেখা যাচ্ছিলো। আমি উনার দিকে তাকাতেই উনিও আমার দিকে তাকালেন। আমি উনার চোখ দেখে কয়েক মিলিসেকেন্ড তাকিয়ে ছিলাম, তাতেই আমার হার্টবিট টা বাড়তে শুরু করলো। আমি চোখ নামিয়ে নিলাম সাথে সাথে।
(চলবে)
আশা করি এই পর্বের গল্পটি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে । যদি ভালো লাগে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন এবং গল্পটি বন্ধুদের কাছে বেশি বেশি করে শেয়ার করবেন।
ধন্যবাদ গল্পটি পড়ার জন্য।খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব আপলোড করব পরবর্তী পর্বের জন্য একটু অপেক্ষা করুন।
আগের পর্বগুলো যারা পড়েন নাই তারা নিচে ক্লিক করে পরে আসুন।
0 মন্তব্যসমূহ