bangla love story - bangla status - হৃদয়ে তোমায় এঁকে যাই

bangla love story , bangla status , হৃদয়ে তোমায় এঁকে যাই

bangla love story - bangla status - হৃদয়ে তোমায় এঁকে যাই


bangla love story 

নতুন কোনো ব্যাচেলর আর ভাড়া দিবো না আমি" 

বাড়িওয়ালা আব্দুল খালেক সাহেব বেশ জোর গলায় কথাটা বললেন। 

আমি আমার ছোট্ট একটা বাক্স নিয়ে, বাসার গেটের সামনে এসে দাঁড়ালাম।

শহরে এসে কি এক মহাবিপদে পড়েছি এতো জায়গা তবুও কেউ জায়গা দিচ্ছে না। আজ সকালে গ্রাম থেকে এসেছি, আমি এ শহরে নতুন মানুষ। সেই আসার পর থেকে বাসা খুঁজে যাচ্ছি কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না৷ এখানে আসার আগে একজন আমাদের গ্রামের একজন পরিচিত বড় ভাই এর সাথে কথা বলেছি। সে বলেছে এই জায়গা গুলোতে পাওয়া যাবে তবে সময় লাগবে। আমি খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত। 

আমি খালেক সাহেবের বাসার সামনে থেকেই সেই বড় ভাইকে কল করলাম। 

উনি আবার ব্যস্ত মানুষ, কি কাজ করে সেটাও খুলে বলে না। 

যাই হোক কল দেওয়ার পর উনি সবটা শুনে আসতে রাজি হলেন আর আমাকে বাসাটার সামনে দাঁড়াতে বললেন৷ 

উনি আসলেন উনার সাথে আবার বাসার মধ্যে ঢুকলাম। 

আমাকে দেখে তো খালেক সাহেব চোখ রাঙিয়ে ফেললেন। তারপর বড় ভাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন..

-এই ছেলেকে তো আমি মানা করে দিয়েছি যে কোনো ব্যাচেলর ভাড়া আমি দিবো না (খালেক সাহেব)

আমার বড় ভাইটা কি থেকে কি বুঝালেন আর উনি বাসা ভাড়া দিতে রাজি হয়ে গেলেন। তবে আমার থেকে কয়েক মাসের অগ্রীম টাকা নিলেন। যাই হোক বাসা তো একটা হলো। 

উনি আমাকে আমার রুম দেখিয়ে চলে গেলেন আর সাথে জানিয়ে দিয়ে গেলেন তার বাসায় থাকার নিয়মনীতি গুলো। 

উনি যখন আমার রুম থেকে চলে গেলো তখন দরজা টা লাগিয়ে দিয়ে একটু আওয়াজ করেই বললাম..

-মনে হয় আগের কোনো ব্যাচলের উনার ইয়াতে বাঁশ ঢু...

নাহহ আর বলা যাবে শুনে ফেললে খবর আছে। এখন দেখি এগুলো গুছিয়ে নিয়ে মাকে কল দেই। উনি তো টেনশনে কয়েকবার কল করেছিলেন৷ 

সব ঠিক ঠাক গুছিয়ে নিয়ে মাকে ফোন করে জানিয়ে দিলাম। উনি এবার চিন্তা মুক্ত হলো। আমিও একটু হালকা হয়ে বিছানায় ক্লান্ত শরীর টা এলিয়ে দিলাম। 

পরদিন সকাল বেলা

bangla love story

বাড়িওয়ালার ডাকে আমার ঘুম ভাঙে। আমি দরজা খুলতেই দেখতে পেলাম উনি একটা বাটি আর প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। উনি সেগুলো আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন...

-সকালের রান্না টা দিয়ে গেলাম, আমি জানি তুমি বাজার করোনি, খাবার টা খেয়ে প্লেট গুলো দিয়ে যেয়ো (কথাটা বলে উনি চলে গেলেন) 

আমি যে কিছু বলব সে সুযোগ ও তিনি দিলেন না। আর তাকে দেখলেই কেমন যেন ভয় লাগে আমার। গতকাল রেগে কথা বলেছে তাই হয়তো। 

আমি ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিয়ে পকেটে কিছু টাকা নিয়ে বের হলাম। সাথে তাদের খাবার প্লেট নিয়ে। বাইরে যাবো কিছু কেনাকাটা করতে। আমি উনার রুমের সামনে গিয়ে দরজায় নক করতেই উনি দরজা খুললেন। উনি কিছু বলার আগেই আমি বাটি আর প্লেট দুটো এগিয়ে দিলাম। 

উনি সেগুলো হাতে নিয়ে বললেন

-ভেতরে আসো একটু

bangla love story

আমি তো ভয়ে আছি না জানি আবার কি বলে। উনি আমাকে একটা সোফায় বসতে বললেন৷ আমি বসলাম। এদিকে ওদিকে তাকিয়ে সবকিছু দেখছিলাম। তাদের রুমটা বেশ বড়। কিন্তু পরিবারের কোনো মানুষ দেখতে পেলাম না। কাল থেকে শুধু তাকেই দেখেছি৷ আমি ভাবনা গুলো শেষ না হতেই উনি এসে আমরা সামনের সোফায় বসে বললেন...

-তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো, তোমার সময় হবে? (খালেক আংকেল)

-জ্বি আংকেল হবে 

-তোমার নামটা যেন কি? 

-শু শুভ 

bangla status

-হুমম তুমি কি জন্য শহরে আসছো??

-আসলে আংকেল আমার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট হয়েছে আমাদের গ্রামের কাছের একটা ভার্সিটি থেকে আসলে মানে আমাদের উপজেলায় একটা ভার্সিটি আছে সেখান থেকে। এখন তো আর আমাদের ওখানে ভালো কোনো চাকরি-বাকরি নেই। এখন কিছু করতে এই শহরে আসা...

-হুমম বুঝলাম তোমার বাড়িতে কে কে আছেন?

-মা-বাবা আছেন আমার আরও দুটো ভাই আছে একটা বড় আরেকটা আমার ছোট। আর দুইটা বোন আছে  

bangla status

-আরেহহ তোমাদের পরিবার তো অনেক বড় 

-জ্বি আংকেল। আচ্ছা আংকেল আপনার এখানে কেউ থাকে না? আপনার পরিবারের কাউকে তো দেখছি না 

-আমি আর আমার একটা মেয়ে এই দুইজন নিয়ে পরিবার 

-কি বলেন! শুধু আপনারা দুজন? 

-হ্যাঁ 

-ওহহ 

হঠাৎ করেই উনি কথা শেষ করলেন আর আমাকে যেতে বললেন৷ আমিও বের হয়ে এসে বাজারে গেলাম কিছু কেনাকাটা ছিলো সেগুলো করলাম। 

আমি গ্রামে থাকা অবস্থায় সব জেনে আসছি যে এখানে কি কি করতে হবে। নিজের রান্নাটা যে নিজে করে খেতে হবে সে প্রস্তুতি নিয়ে আসছি৷ 

,,

আর চাকরির কথা কি বলব! সে তো সোনার হরিণ! একটা ভালো চাকরির জন্য যে বেশ লড়াই করতে হবে সেটা বোঝাই যাচ্ছিলো৷ যাই হোক শহরে আসছি আগে শহরটাকে চিনে দেখি, 

শহর যদি অচেনা হয় তাহলে এ শহর থেকে আমি কিছু নিতে পারবো না৷ 

,,

বাজার করে বাসায় ফিরলাম। 

তরকারি কাটলাম, গ্যাসের চুলায় ভাত ও বসিয়ে দিলাম। দেড় ঘন্টার বেশি সময় নিয়ে রান্না শেষ করলাম৷ 

তারপর গোসল করে নিলাম। 

ভেজা কাপড় গুলো কোথায় মেলে দিতে হবে সেটাও আংকেল বলে দিয়েছে। তবে কোনো দরকার ছাড়া আমাকে ছাদে যেতে বারণ করা হয়েছে। যাই হোক সেটা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। 


আমি ছাদে উঠে দেখলাম মাঝ বরাবর একটা রশি টানানো সেখানে আমার লুঙ্গি মেলে দেওয়ার জায়গা নেই। তারপর ভাবলাম এখনে তো অনেক গুলো কাপড় শুকিয়ে আছে সেগুলো একটু সাইড করে রাখলেই আমার টা দেওয়া যাবে। ঠিক তাই করলাম। একটা কাপড় সরাতেই ছাদের কোণ ঘেঁষে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলো হঠাৎ করেই আমার দিকে তাকালো। তার সাথে চোখে চোখ পড়ায় কেমন যেন আমিও কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেলাম চোখ সড়াতেই পারলাম না। মেয়েটির মায়াবী চেহারায় আটকে গিয়ে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম আমি ছাদে আমার কাপড় মেলতে এসেছি। 

কয়েক সেকেন্ড পর মেয়েটি বলল..

-এই আপনি কে??(মেয়েটি)

ছি ছি কি করে ফেললাম, নির্লজ্জের মতো উনার দিকে তাকিয়েছিলাম এমনটা আর কখনো হয়নি। আমি তার কথায় কোনো উত্তর দিতে পারছিলাম না। 

মেয়েটি এগিয়ে এসে বলল...

-কি সমস্যা কথা বলতে পারেন না? (মেয়েটি)

-জ্বী পারি (আমি)

-কি সমস্যা ছাদে কি জন্য আসছেন? 

-এই যে এটা মেলে দিতে 

-আমার দিকে কি দেখলেন 

-নীল আকাশে রঙিন ঘুড়ি

-মানে? 

হাইরে কার মধ্যে কি বলে ফেললাম! আমার আবার মাথায় সমস্যা হলো নাকি, কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলেছি এলোমেলো কথা বের হচ্ছে মুখ দিয়ে। 

মেয়েটা বার বার এর উত্তর জানতে চাইলো, কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম

এখানে থাকলে আমার এখন বিপদ হবে, আমি ঝটপট কেটে পরার চেষ্টা করলাম কিন্তু তার আগেই সে আমার গালে ঠাটিয়ে একটা চর মারলো। আমি গাল ধরে দাঁড়িয়ে থাকলাম আর সে বলতে শুরু করলো...

বাবা কাদের যে ভাড়া দেয়, বদ লোকজন যত্তসব (মেয়েটি)

আমরা চুপ থাকা আর এলোমেলো কথা বলা উনি খারাপ হিসেবে নিয়েছেন। আর আমি এটাও বুঝতে পারলাম এটাই বাড়িওয়ালা আংকেল এর মেয়ে। যেমন বাবা তেমন মেয়ে দুজনের রাগ মাত্রাতিরিক্ত) 

হৃদয়ে তোমায় এঁকে যাই - পর্ব ১

আমি চর টা খেয়ে নিজের রুমে আসলাম গাল টা এখনো ব্যাথা করছে। এ নিয়ে আমার কোনো সমস্যা না, সমস্যা হলো আংকেল কে যদি বলে দেয় তাহলে আজকেই তলপিতলপা গুছিয়ে এখান থেকে বিদায় নিতে হবে। কি যে একটা চিপায় পড়লাম। 

দোষ কাকে দিবো? আমাকে? নাকি আমার চোখকে? 

সে যাই হোক আকাশে রঙিন ঘুড়িটা আমার কাছে অপরূপ ছিলো। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ