Love status - love status bangla - সুখ নেই কপালে

Love status,  love status bangla 

love picture - love pic
Love status - love status bangla  



সুখ নেই কপালে 

কারণ সরূপ,রুহির মাকে যখন পুলিশ জিজ্ঞেসা 

করেছিলেন,

কাউকে সন্দেহ হয় কি না?

তখন কিন্তু রুহির মা নির্দ্বিধায়ই উত্তরে পুলিশ কে

আমার নামটিই সর্বপ্রথম বলেছেন

অতঃপর আবারও নতুন কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে 

কিঞ্চিৎ পরিমাণ অপরাধ না থাকা সত্যেও অন্ধকার 

এই জেল-খানায় বন্দী হতে হয় আমায়। যেথায় নেই 

কোনো আলো কিংবা বাতাস।চারদিকে রয়েছে শুধুই 

খাড়া খাড়া দেয়াল এবং মাথার উপরে সম্পূর্ন ময়লার

দখলে ভাঙা একটি বাতি যেটা অবশ্য সার্বক্ষণিক নিভু

নিভু করে, হাল্কা হাল্কা আলো দেয়। শীতের রাত ঠান্ডা ফ্লোর, দুঃখ-জনক ব্যাপার শীতকে মোকাবিলা করার 

জন্য, উপস্থিত নেই কোনো সরঞ্জাম।বিচিত্র সব ঘটনা 

খোদা কেনোই প্রতিবার লিখে রাখেন আমার মতো 

অভাগার এই পোড়া কপালে!সঠিক জানিনা কখনো, 

সুখের দেখা অথবা সন্ধান কি আমি আদৌও পাবো?

হয়তো সত্যিই পাবো না কারণ সুখ বলে কোনো কিছুই 

আমার এই পোড়া কপালে বিধাতা যে লিখে রাখে নি। 

তাইতো পথভ্রান্ত হয়ে, প্রতিনিয়ত বোধ হয় এভাবেই

ঘুরে বেড়াচ্ছি বনে বনে।দিশাহারা আমি,কি থেকে ঠিক 

কি করবো কিছুই প্রবেশ করছে না আমার এই মাথার

গহীনে।অদ্ভুত পৃথিবী,অতি অদ্ভুত সব মানুষ-জন।আহ

পারছি না আর বুকের এই কষ্টের দহনে সর্বদা পুড়তে।

কত স্বপ্ন দেখেছিলাম,মনে পোষণ করেছিলাম,আরই

তো কদিন,ভার্সিটি জীবন পেরিয়ে, নিজেকে চাকরির

পথে অগ্রসর করবো।প্রথম বেতন-খানা আমি মায়ের 

হাতে তুলে দিবো,বাবাকে নতুন জামা-কাপড় কিনে

দেবো,পথশিশুদের,নিজ হতে দু-বেলা দু-মুঠো খাবার 

তুলে দিবো।কিন্তু হলোনা আমার সেই ক্ষুদে স্বপ্ন পূরণ। অজানা,অদৃশ্য সব কষ্ট আমায় ধীরে ধীরে গ্রাস করার 

চেষ্টা করছে।না জানি জীবনে কিরূপ ঘৃণার কাজ 

আমি করেছিলাম যার ফল সরূপ একের পর এক 

কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে এভাবে অসহায়দের

মতো দেখতে হচ্ছে।পরের দিন সকালটা আমার শুরু

হয়,মূলত পুলিশের লাঠি চার্জের ভিত্তিতে।গরম কন্ঠ 

স্বরে জিজ্ঞেসা বাদ করা হয়েছিলো আমায়, বল আর 

কোন কোন জারজ পাপিষ্ঠ সন্তান ছিলো তোর সাথে?

প্রতি উত্তরে তখন আমি অসহায়,ভেজা কন্ঠ স্বরেই

বলেছিলাম,আমি সম্পূর্ণই নির্দোষ স্যার?আজ পর্যন্ত

কিঞ্চিৎ অন্যায় আমি আদৌও কারও সাথে করেছি 

কিনা তা কিন্তু বেশ সন্দেহের।জানেন স্যার,আমারও 

একটা মিষ্টি,মায়াবী চেহারার অধিকারী ছোট্ট বোন 

ছিলো।যে রোজ রাতে,ঘুমানোর আগে আমায় বলতো,

-ভাইয়া আমি একদিন অনেক বড় একজন স্বনাম-ধন্য

আদালতের বিচারক হতে চাই।তুই আমায় অত-দূর

পড়াবি তো?


''তখন,আমি বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে,হাস্য-উজ্জ্বল

কন্ঠ স্বর,প্রয়োগ করে একপ্রকার মজা করেই জবাবে

বলতাম,বিচারক হয়ে কি করবি শুনি?তোকে তো 

বিয়ে দিয়ে দেবো,বুড়ো লাউের সাথে?লাজুক ভরা 

মুখে বোন আমার তখন গম্ভীর কন্ঠ স্বরেই বলতো,


-আমাদের দেশে সৎ বিচারকদের বড়ই অভাব ভাইয়া!

যেমন আমাদের থেকে যখন আত্মীয়-স্বজনরা ধোকার

বশীকরণে আসক্ত হয়ে সব ধন-সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে 

ছিলো,তখন কিন্তু আমরা কোর্টে মামলা করেছিলাম।

কিন্তু ন্যায্য বিচার পাইনি সেদিন মোরা!তার একমাত্র 

কারণ সরূপ,আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা আদালতের

বিচারক কেই স্বয়ং টাকার গন্ধে,নেশায় নেশাগ্রস্ত করে 

কিনে নিয়ে ছিলো।টাকা চাইলে সত্য কেও ধামাচাপা 

দেওয়ার সক্ষমতা রাখে ভাইয়া,সেটা একজন টাকা

ওয়ালা অসৎ ব্যক্তিও খুব ভালো করে জানে।সেদিনই 

আমি এক প্রকার নিজেকে শক্তপোক্ত হিসেবে চিহ্নিত 

করে,মনে মনে স্বপ্নের জাল বুনে ছিলাম।ভাইয়া আমি 

এমন একজন সৎ,বিচারক হতে চাই,যাকে চাইলেও

এ দুনিয়ার কেউই অন্তত টাকা দিয়ে কিনতে পারবে 

না।

________________

জানেন স্যার,তখন আমি বোনকে প্রায়ই জড়িয়ে ধরে

বলতাম,আমার যতই কষ্ট হোক বোন!আমি তোকে

একজন শ্রেষ্ঠ বিচারক হওয়ার জন্য কোনো কিছুরই 

খামতি রাখবো না।কিন্তু কি জানেন স্যার,এসএসসি 

পরিক্ষা চলাকালীন,মূলত পদার্থবিজ্ঞান পরিক্ষার পর

যখন আমার বোন হাসি-মাখা, মুখ-খানিতে বাসায় 

ফিরছিলো তখন,কিছু বখাটে, লোকজন আমার

একমাত্র আদরের বোনটাকে জিম্মি করে কোনো এক 

অজানা স্থানে নিয়ে গিয়ে দেড় দিনের মতো বোনকে 

ধর্ষণ করার পর গলা-কেটে,কুপিয়ে হত্যা করে তারা।

যার-পর ফেলে দেওয়া হয় জঙ্গলে,নিষ্পাপ বোনের 

শীতল লাশ-খানি।এমনকি রাস্তার ক্ষুধার্ত কুকুররাও

পর্যন্ত লোভাতুর জিহবায় এগিয়ে এসে,বোনের নৃশংস 

লাশের মাংস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছিলো।যার পরে এক

জন ভাই অথবা মা-বাবার উপরে কি পরিমাণ যন্ত্রণা 

বেদনার আচঁড় লাগতে পারে সেটা হয়তো আপনি 

কখনো উপলব্ধিতে সক্ষম হবেন না স্যার।কারণ সরূপ 

এরূপ ঘটনা আপনাদের সাথে হয়নি কখনো তাই।


আজও আমার বোনের সর্বনাশের অপরাধীরা খোলা

মেলা আকাশের নিচে,শ্বাস-প্রশ্বাস ছেড়ে শান্তিপূর্ণ 

অবস্থায় বসবাস করছে,যা ভাবলেই আমার বেশ 

একটা শ্বাস রুদ্ধ হয়।অবশ্য পুলিশ তাদের ধরতে 

একদমই ব্যর্থ।তাই তো বাধ্য হয়ে শেষ-মেশ টাকার

চাহিদার কাছে পরাজিত হয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ বোনের 

কেসটি কন্টিনিউ করাতে পারিনি।আমরা একসময় 

অনেক বড়লোক ছিলাম কিন্তু ভাগ্যের অতি নির্মম 

পরিহাসের ভিত্তিতে আমাদের অবস্থান অনেকটাই 

নিচে নেমে যায়।সেই থেকে ধর্ষণের নাম আমার এই

কান নামক বিশেষ যন্ত্র দিয়ে শুনলে,শরীর শিউরে 

ওঠে।বুকের ভেতরের দহন গুলো তুলনামূলক ভাবে 

দ্বিগুন আকারে রূপ ধারণ করে,বেড়ে যায়।ভূমন্ডলে

কাপনির সুত্র-পাত ঘটে।মাথার গহীনটা আমার তীব্র 

রাগে সম্পূর্ণটাই ভরাটে পরিণত হয়।আর আপনি 

বলছেন,আমি নিজের ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অপরাধটা

শিকার করে নিয়ে শিকা-রক্তি পেপারে সাইন করবো 

বড়ই হাস্যকর ব্যাপারটা।যেখানে আমি কোনো কিছুই 

করিনি।আমি নির্দোষ,নিরপরাধ।ট্রাস্ট মি স্যার!


কিন্তু তবুও তারা কেউই আমার কথা বিশ্বাস করেনি।

রি-মান্ডে নিয়ে গিয়ে প্রচুর টর্চার করার পর যখন তবুও

আমার মুখ-খানি থেকে আমি নির্দোষ এ ছাড়া আর 

কোনোই শব্দ বের হচ্ছিলো না তখন নতুন এক মহিলা

পুলিশের আগমন ঘটেছিলো,যে মূলত এতদিন ছুটিতে 

ছিলেন।অবশ্য তাকেই পরবর্তীতে এই কেসটা হ্যান্ডেল

করার জন্য দায়িত্ব প্রধান করা হয়।পুলিশ দের এই

একটা বিরাট সমেস্যা,নির্দোষদেরই সর্বদা তারা দোষী 

মনে করেন এবং অপরাধীদের নির্দোষ।


অতঃপর মহিলা পুলিশ অফিসারটি যেদিন সর্ব প্রথম 

আমায় জিজ্ঞেসাবাদ করতে এসেছিলেন তখন আগেই 

এই প্রশ্নটা করেছিলেন, তোমার জীবনে হয়তো অনেক 

কষ্ট,তাই না ?

"তখন জবাবে আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যা সম্মতি প্রধান

করেছিলাম।যার পরপরই তিনি আমায় বেশ কিছু প্রশ্ন

করার পর কিছুটা আশ্বাসি সুরে বললেন,জানি না তুমি 

সত্যিই নির্দোষ কি না?তবে এই ভরসা আমি তোমায়

প্রধান করতে পারি,তুমি যদি সত্যিই আমাকে সব ট্রুথ 

কথা বলে থাকো,অথবা নির্দোষী হয়ে থাকো তাহলে,

আমি তোমার কিঞ্চিৎ পরিমাণ ক্ষতিও হতে দিবোনা।


সেদিন জানি না কেনো আমি তার চোখে,চোখ রেখে 

ভরসা করার মতো আলাদা একটা উৎস খুঁজে পেয়ে 

ছিলাম।মন যেন বারবার আমায় বলেছিলো,তিনি

অবশ্যই আমাকে নিরাশ অথবা হতাশ কিছুই করবেন

না।যা সত্যি বলতে আমি অন্তত ভুল কিছু ভাবিনি।যার

মাত্র এক মাসের মাঝেই তিনি আমায় নির্দোষ প্রমান

করতে এবং মূল আসামীদের ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন

।এটা বেশ একটা আমি মানতে বাধ্যই বটে,তিনি এক

জন,মেধাবী,দক্ষ নারী পুলিশ অফিসার।আজকাল 

এরূপ নারী পুলিশ অফিসার অনেকটা কমই দেখা

যায়।


মূলত, রুহিদের বাসার কম বয়সী কাজের ছেলেটাই

প্রথমত রুহির মাকে আমার সম্বন্ধে ভুলবাল অনেক

কিছুই বুঝিয়েছে।যাতে রুহির সাথে খারাপ কিছু হলে

সন্দেহের তালিকায় প্রথম নামটা যাতে স্বয়ং আমারি

আসে।তার একমাত্র প্রধান কারণ সরূপ,রুহির দিকে 

ছেলেটির আগে থেকেই খারাপ নজর ছিলো।অবশ্যই 

এই পাপিষ্ঠ ছেলেটিই তার সহযোগীদের নিয়ে দলবদ্ধ 

ভাবে ইন্টারে পড়ুয়া আমার ছাত্রী রুহিকে ধর্ষণ 

করেছে।যার ফল সরূপ ছেলেটি এখন পুলিশের 

তত্ত্বাবধানে,থার্ড-ডিগ্রির সম্মুখীন হচ্ছে।এই নিয়ে 

রুহির মা আমার কাছে বেশ কয়েক বার ক্ষমাও 

চেয়েছেন বটে।এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার

রুহিকে পড়াতে যাওয়ার বিশেষ অনুরোধ করেছেন।

অবশ্য রুহির মন-মানসিকতা এখনও তেমন একটা 

ভালো নেই।রাতের আকাশে,জ্বল জ্বলে চাঁদের আসে 

পাশে থাকা তাঁরা-গুলোর দিকে তাকিয়ে রয়েছি আমি

ভালোবাসার সেই মানুষটিকে আজ বেশ একটা মনেই 

পড়ছে আমার।তার দেওয়া সেই থাপ্পর এবং অপমান 

গুলো কেনো যেন আজও আমার চোখের অশ্রুর 

সূত্র-পাত ঘটায়।কি আর করবো আমি।নিজের এরূপ 

করুণ ভাগ্যকে তো মেনে নিতেই হবে।ধৈর্যধারণ করা 

ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই আমার সম্মুখে।আজ 

প্রায়ই কতদিন অতিবাহিত হলো।মা-বাবা,চাচি অথবা 

ভালোবাসার মানুষটির সাথে আজও কোনো প্রকার যোগাযোগ বা সাক্ষাৎ হয়নি।জানি না তারা এখন 

কেমন আছে,হয়তো ভালো নেই তবুও সৃষ্টি কর্তার 

নিকট তাদের জন্য রইলো বিশেষ প্রার্থনা।খানিকক্ষণ 

পূর্বে রুহির মা আমাকে ফোন করে বলেছেন, 

আগামীকাল থেকে রুহিকে আবার আগের মতো 

পড়াতে আসতে।যার মাত্র কয়েক ঘন্টা পর সেই 

পুলিশ ম্যামের একটা বেশ বড়সড় এক্সিডেন্ট হয়।

গুরুতর ভাবে আহত তিনি।যার এক সপ্তাহ পর আমি 

ওনাকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি 

নিচ্ছিলাম।অবশ্য ওনার সাথে আমার প্রায়ই,সময়

মাঝে-মধ্যে কথা হতো।বেশ একটা ভালোই সম্পর্ক 

গড়ে উঠেছিলো।অতএব যখন ওনাকে দেখার জন্য 

আমি হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছিলাম।তখন,রৌহিকা 

ম্যাডামকে ওনার বেডের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, 

আমি অবাক,আশ্চর্য,হতবাক,হতভম্ব না হয়ে পারলাম 

না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ